প্রতীকের PR Studios থেকে রিলিজ হল সোমতন্দ্রা পালের নতুন রবীন্দ্র সংগীত "কোন কাননের ফুল"
রিপোর্টার : প্রিয়া চৌধুরী
দুদিন আগে , টলিউডের সংগীত পরিচালক প্রতীক কর্মকারের মিউজিক কোম্পানি PR Studios থেকে মুক্তি পেল গায়িকা সোমতন্দ্রা পাল এর কন্ঠে রবীন্দ্র সংগীত "কোন কাননের ফুল" । সেই পরিপ্রেক্ষিতেই গায়িকার সম্মুখীন হয়েছিল টলিউড ক্যানভাস ।
Tollywood Canvas : PR Studios থেকে আপনার রবীন্দ্র সংগীত রিলিজ হল, কেমন লাগছে PR Studios এর সাথে কাজ করে ?
Somtandra : PR Studios এর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা বেশ ভালো।
Tollywood Canvas : এত রবীন্দ্রসঙ্গীত থাকতে কোন "তুমি কোন কাননের ফুল" গানটি বেছে নিলেন ?
Somtandra : রবীন্দ্রসংগীত সবসময় আমার কাছে এক অন্যরকম অনুভূতি।আমার ইউটিউব রিলিজও আমি প্রথম শুরু করেছিলাম একটি রবীন্দ্রসংগীত দিয়েই।কিন্তু রবীন্দ্রসংগীত গাইতে ভয়ও পাই খুব। এমন কথা আর সুর যা আল্টিমেট, এর সঙ্গে কতটা জাস্টিস করার যোগ্য হয়েছি আমি এটা ভেবে দ্বিধায় থাকি।তবে এ ব্যাপারে প্রতিবারই উৎসাহ দিয়ে এগিয়ে দেন আমার দাদা, এবং প্রতিবারই তারই যন্ত্রানুসঙ্গে প্রিয় রবীন্দ্রসংগীত গুলো গাইবার চেষ্টা করি আমার সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতায়।কোন কাননের ফুল আমার মায়ের ভীষণ পছন্দের,তাই দাদা যখন গানটার কথা বলে,আমি সঙ্গে সঙ্গে আগ্রহী হই।
Tollywood Canvas : এখনতো রবীন্দ্র সংগীত পাশ্চাত্য মিউজিক এর মাধ্যমেও হচ্ছে। আপনার কোনটা বেশি পছন্দ পাশ্চাত্য ভাবে রবীন্দ্রসংগীতকে দেখা, নাকি আমাদের ভারতীয় সংস্কৃতি যেভাবে রবীন্দ্র সংগীত গেয়েছেন সেভাবে গাওয়া???
Somtandra : আমার মনে হয় রবিঠাকুর যে কথায় যে সুর যে আবেগে সৃষ্টি করে স্বরলিপিতে সেটা বেঁধে গেছেন সেটা আল্টিমেট..এর পর বাড়তি কিছুর প্রয়োজনই পড়ে না।সেই স্বরলিপি অনুসরণ করে গানের কথার যথার্থ অর্থ বুঝে আবেগ দিয়ে গাইতে পারলে আর কিছু ইম্প্রভাইজেশন,ভ্যারিয়েশন দেওয়ার জায়গাই থাকে না।তাই সুর ও সুরের সুক্ষ সুক্ষ জায়গাগুলো স্বরলিপি বদল করে গাওয়ার প্রয়োজন আমি ব্যক্তিগতভাবে অনুভব করিনি।কিন্তু গায়কী ব্যক্তিবিশেষে ভিন্ন হয়।রবিঠাকুরের গায়কীকে অন্ধ অনুসরণ করে কেউ নিজস্বতা আটকে যদি জোর করে তাঁর গায়কী রপ্ত করে গাইতে চেষ্টা করে সেটা আমার মতে হয়ত ঠিক নয়। প্রত্যেক মানুষের টোনাল কোয়ালিটি,গায়কী ভিন্ন হবেই।আমার মনে হয় তাঁর সুর আর কথার অর্থ বুঝে যথার্থ আবেগ দিয়ে সুরে গাওয়াটাই আসল।আর গানের কথা সুরকে বিকৃত না করে কেউ যদি পাশ্চাত্য মিউজিক দিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করেন এবং তা শ্রুতিমধুর হয় তাহলে আমি শ্রোতা হিসেবে সেটাও পছন্দ করব।
Tollywood Canvas : আপনার সঙ্গীত জীবনে কাকে অনুসরণ এবং অনুকরণ করেন ???
Somtandra : আমি মনে করি,সঙ্গীতজীবন আর ব্যক্তিগতজীবনের মধ্যে একটা ব্যালেন্স থাকলেই সংগীতে সেটার পজিটিভ এফেক্ট পড়ে।যে ব্যক্তিগত জীবনে খুব গোছানো,আন্তরিক,নম্র,নিরহংকার- তার সংগীতজীবনেও তার এফেক্ট পড়বে।একজন শিল্পীর অবশ্যই আদর্শবান, অমায়িক,ডিসিপ্লিন্ড হওয়া পজিটিভ দিক। সে যেন কখনো কোনো অবস্থাতেই পায়ের নিচের মাটিকে অবজ্ঞা না করে।সেদিক থেকে আমি আমার গুরুর আদর্শকে ভীষণভাবে শ্রদ্ধা করি।আর ব্যক্তিগতজীবনে আমার আদর্শ আমার বাবামায়ের সততা এবং আমার স্বামীর জীবনদর্শন।এবং প্রফেশনাল লাইফে আমায় অনেক ক্ষেত্রেই সঠিকপথে গাইড করেন আমার দাদা।
Tollywood Canvas : প্রতীক কর্মকারের মতন একজন সংগীতশিল্পীর সংস্থা থেকে আপনার গানটি রিলিজ হল পরবর্তীকালে উনার সাথে কোনো কাজ করার ইচ্ছে বা কথা কি চলছে ???
Somtandra : নিশ্চয়ই কাজ করার ইচ্ছে থাকবে এই সংস্থা থেকে। সামনেই আমার আরো দুটো কভার সং রিলিজ হচ্ছে যা আমি এই সংস্থা থেকে করব বলে ভেবে রেখেছি।কোনো শিল্পী- সে ছোট হোক বা নামী,তার গাওয়া গান তার কাছে অনেকটা, সেটা অনেক সংস্থাই একটু নাম অর্জন করার পর দায়িত্ব নিয়েও দায়সারা করে রিলিজ করে রেখে দেয়।সেদিক থেকে প্রতীক একজন সংগীতমনস্ক মানুষ এবং ভালো গানের স্বার্থে যথেষ্ট আন্তরিক।তাই প্রতীকের সংস্থার সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে নিশ্চয়ই থাকবে।
Tollywood Canvas : গানটি ইতিমধ্যেই সবকটা ডিজিটাল মিউজিক স্টোরস এ খুব প্রশংসা পাচ্ছে , প্রচুর স্ট্রিমিং হচ্ছে,সেটি নিয়ে আপনার কি বক্তব্য ???
Somtandra : একটা গানের পিছনে সমস্ত পরিশ্রম সার্থক হয় সেটা শ্রোতারা আপন করে নিলে।সেদিক থেকে যত মানুষের মধ্যে এই গান পৌঁছবে,মানুষ ভালোবাসবে, সেটাকে সেরা আশীর্বাদ মনে করেই এগিয়ে যাব।
Tollywood Canvas : পরবর্তীকালে আপনার কি কি কাজ আসতে চলেছে ???
Somtandra : পরবর্তীতে আমার কয়েকটা কভার সং এবং আমার নিজের কম্পসিজশনে কিছু মৌলিক বাংলা গান আসতে চলেছে।
Tollywood Canavs : আপনার দর্শকদের জন্য কিছু বার্তা ???
Somtandra : আমার দর্শকরাই আমার শক্তি,ইন্সপিরেশন।আমি তাদের উদ্দেশ্যে এটাই বলব- এভাবেই সঙ্গে থাকুন। ওভারঅল বলব,ভালো কাজের সঙ্গে থাকুন সেটা যারই হোক।ভালো কাজ যেদিন বেশিমাত্রায় তারা ছড়িয়ে দেবে সেদিনই নন-মিউজিক্যাল কন্টেন্টগুলোর ভাইরাল হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি হবে।দর্শক শ্রোতাদের এক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা এবং দায়িত্বও আছে।মনে রাখতে হবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আমরা যেন একটা সুস্থ সাংগীতিক পরিবেশ রেখে যেতে পারি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন